জেলা প্রতিনিধি–বাবা সুরুজ আলীকে (৬৫) গলা কেটে হত্যা করেছেন তারই ছেলে সুজাত মিয়া (২৮)। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে মারধরের শিকার হওয়ায় ও তালাকের হুমকি পেয়ে তাদের ফাঁসাতে সুজাত মিয়া এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।”
;গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন সুজাত মিয়া।”
;জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত সোমবার দিনগত রাত ২টার দিকে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গন্ধর্ব্বপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।”
;পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে বৃদ্ধ বাবা সুরুজ আলী নিজ ঘরে ছোট ছেলে সুজাত মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে সুজাত মিয়া ঘুমন্ত বাবাকে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে পাশের বাড়ির লোকজনদের গিয়ে জানান- একদল ডাকাত তার বাবাকে হত্যা করেছে।”
;খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়।এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ। প্রাথমিকভাবে চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ঘটনার পরদিন নিহতের মেয়ে খোদেজা বেগম অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে সন্দেহভাজন সুজাত মিয়াকে আটক করে গত বুধবার আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।”
;সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম আল মামুন জানান- রিমান্ডে আনার পর থেকে আসামি একেকবার একেক কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে গত শুক্রবার তিনি তার বাবাকে গলা কেটে হত্যার কথা স্বীকার করেন।”
;এসআই শামীম আল মামুন আরো জানান, আসামির স্ত্রী বিগত এক বছর ধরে বিদেশে রয়েছেন। তবে তিনি তার স্বামীর কাছে টাকা না পাঠিয়ে নিজের বাবার বাড়িতে টাকা পাঠান। এ নিয়ে সুজাত মিয়ার সঙ্গে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরোধ দেখা দেয়। এরপর শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের ফাঁসাতে সুজাত মিয়া তার বাবাকে গলা কেটে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন।”
;জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন- পুলিশের কাছে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করার পর সুজাত মিয়াকে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা’সহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে আসামিকে সুনামগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়।,