মঙ্গলবার২৬শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ৩রা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি১১ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঁদপুরে বরখাস্ত উপাধ্যক্ষ জালিয়াতির দায়ে জেলে

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক উপাধ্যক্ষ এইচ এম মহিউদ্দিনকে জালিয়াতির দায়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। গত রোববার চাঁদপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোরশেদুল আলম এ আদেশ দেন। তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় সুনির্দিষ্ট অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। সর্বশেষ তিনি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার শ্রীপুর ইসলামিয়া কামিল (এম এ) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ধানুয়া ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

খোজনিয়ে জানা গেছে, এইচ এম মহিউদ্দিন ফরিদগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত থাকাবস্থায় নৈতিক স্খলনসহ মাদ্রাসার শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে মাদ্রাসা কমিটি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামে মামলা করে।

এই অবস্থায় এইচ এম মহিউদ্দিন মাদ্রাসার স্বার্থ ও শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে পুনরায় লিপ্ত হলে মাদ্রাসা কমিটি চলতি বছরের ১ জানুয়ারি তাকে স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করে। এরপর ৬ ফেব্রুয়ারি তিন দিনের একটি ছুটির আবেদন মাদ্রাসায় জমা দিয়ে আর কর্মস্থলে যোগ দেননি তিনি। এরইমধ্যে তথ্য গোপন করে তিনি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার শ্রীপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল মান্নান ধানুয়া ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদের কাছে এইচ এম মহিউদ্দিনকে প্রদত্ত ছাড়পত্র সম্পর্কে জানতে চান। তাকে কোনো ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি নিশ্চিত হওয়ার পরে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান হোয়াটসঅ্যাপে ধানুয়া ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদের কাছে (এইচ এম মহিউদ্দিন কর্তৃক দাখিলকৃত) ছাড়পত্রটি পাঠালে এইচ এম মহিউদ্দিনের জালিয়াতির বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে।

এরপর ধানুয়া ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ বাদী হয়ে এইচ এম মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। আদালত এ মামলা তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়। তদন্ত শেষে পিবিআই এইচ এম মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতি, অবৈধ সিল মোহর তৈরি, জাল ছাড়পত্র প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করায় পেনাল কোডের ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় সুনির্দিষ্ট অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে বলে প্রতিবেদন দেয়। গত ২২ সেপ্টেম্বর রোববার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।।