সংবাদাতা- কুমিল্লার দেবিদ্বারে শুক্রবার দুপুরে বৌ-ভাত অনুষ্ঠান থেকে কনেকে তুলে নিতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা ও তার সহযোগীসহ ২৫ জন। উপজেলার সাহারপাড় মাঝিবাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে মারাত্মক আহত সাতজনকে পুলিশ আটক করেছে।
নিমসার কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি ইসমাইল ও সহযোগী সাকিবের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল বৌ-ভাত অনুষ্ঠান থেকে কনেকে তুলে নিতে এসে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে। ইসমাইল ও সহযোগী সাকিবের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা ৭টি মাইক্রোবাস যোগে বরের বাড়ি থেকে কনেকে তুলে নিতে যায়।
এ সময় বাড়ির লোকজন বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। তারা বাড়িঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এ সময় বাড়ির লোকজনের চিৎকার শুনে গ্রামের লোকজন এগিয়ে আসে। গ্রামের বিভিন্ন মসজিদের মাইক থেকে সন্ত্রাসী হামলার সংবাদ দেয়া হয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসীরা সন্ত্রাসীদের ঘেরাও করে এবং গণধোলাই দেয়। এতে ২৫ সন্ত্রাসী আহত হয়। খবর পেয়ে দেবিদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহরাব হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং সাতজনকে আটক করে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়।
আটকরা হল কোতোয়ালি থানার জাগরতলি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে আলী হোসেন (২১), বুড়িচং উপজেলার কোরপাই গ্রামের মরণ পালের ছেলে সজিব পাল (১৯), চান্দিনা উপজেলার এদবারপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে বাছির আহমেদ (২২), চান্দিনা উপজেলার মহরম গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে নাহিদুল ইসলাম (২২), বুড়িচং উপজেলার নামতলা গ্রামের সুজাত আলীর ছেলে মোহাম্মদ জাফর (২০), চান্দিনা উপজেলার জাফরাবাদ গ্রামের আবদুল আউয়ালের ছেলে মেহেদী হাসান (২১), দেবিদ্বার উপজেলার সূরপুর গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে মো. আলম (২২)।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জহিরুল আনোয়ার জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানিয়েছে নূরীতলা এলাকায় সাংগঠনিক মিটিং আছে বলে ইসমাইল ও সাকিব সাতটি মাইক্রোবাস যোগে তাদের নিয়ে আসেন। পরে তারা এ ঘটনা জানতে পারে। গ্রামবাসীরা আমাদের ঘেরাও করে ফেললে ইসমাইল ও সাকিব পালিয়ে যায়। তারা আরও জানায়, কনের সঙ্গে ইসমাইলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
সাহারপাড় গ্রামের বরের চাচাতো ভাই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ১ ফেব্রুয়ারি বিয়ে হয়। বিয়ের পর কনেকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে আসার পর ইসমাইলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী সেদিন কনেকে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। প্রতিরোধে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় বরের বাবা দেবিদ্বার থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করে রাখেন। কিন্তু শুক্রবার বৌ-ভাত অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসীরা আবারও হামলা চালায়।