’ ঢাকার তুরাগ নদ। দুপুর দেড়টা প্রখর রোদে নদীর পানিও প্রচণ্ড গরম হয়ে গেছে। তীব্র গরমে নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকাও কঠিন হয়ে পড়েছে। পারাপারে তেমন মানুষও নেই দিয়াবাড়ি ঘাটে। তাই ২/৪জন মানুষকে নিয়েই মাঝিরা নৌকায় পারাপার করছেন। “
;হঠাৎ চোখে পড়লো দূর থেকে একটি নৌকা দ্রুত গতিতে নদীর ওপাড় থেকে এই পাড়ে ছুটে আসছে। দেখে বোঝাই যাচ্ছে দুই চার জন যাত্রীর আশার নৌকাটি ঘাটের দিকে এগিয়ে আসছে। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো বৈঠা হাতে যিনি নৌকা চালাচ্ছেন তিনি একজন ষাটোর্ধ্ব নারী। বয়সের ভার চোখ মুখে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। তবে বৈঠা চালানোর ভঙ্গিমা দেখে মনে হচ্ছে শরীরে এখনো অনেক শক্তি তার।”
:কথা বলার পর জানা গেল- শুধুমাত্র পেটের তাগিদেই শরীরের সবটুকু শক্তি দিয়ে নৌকার বৈঠা ঠেলে যাচ্ছেন ওই বৃদ্ধা মা। হাতের ঈশারা দিতেই তার নৌকাটি কাছে এসে ভিড়ালেন সেই বৃদ্ধা। জানালেন তার নাম-রাবেয়া বেগম। বয়স ৬১ বছর। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে তার। ছেলেরা বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেছে এবং মেয়েদেরও বিয়ে দিয়েছেন। সেই ছেলেমেয়ের ঘরে এখন নাতি নাতনিও রয়েছে রাবেয়ার “
;১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যার সময় স্বামীকে হারিয়েছে রাবেয়া। স্বামীর মৃত্যুর পরে এই নৌকা চালিয়েই চার সন্তানকে বড় করেছেন। তাদের এখন আলাদা আলাদা সংসার। ছেলেরা কাজ করে, মেয়েরাও স্বামীর সংসারে। সবাই সুখেই রয়েছে। শুধু কারও কাছে ঠাঁই হয়নি বৃদ্ধ মা রাবেয়ার। তাই আজও নৌকা বৈঠার সঙ্গে লড়াই করেই বেঁচে থাকার চেষ্টা রাবেয়ার।’