বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশের বেশির ভাগ ব্যাংক ও মূল্যবান ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ এদেরই হাতে। অথচ কি দুর্ভাগ্য;
দেশের শীর্ষ শিল্পপতি ভাইদের পালাক্রমে আইসিইউ, এক ভাইয়ের মৃত্যু!
ছোট ভাইকে তীব্র শ্বাসকষ্টে আইসিইউ বেডে নেয়া হয় আগে। ঘন্টা কয়েকের ব্যবধানে বড় ভাইর শ্বাসকষ্ট চরমে উঠে। বাঁচার জন্য আকুলি বিকুলি করছেন তিনি। কিন্তু হাসপাতালের দশটি আইসিইউ-ভেন্টিলেশনের সবগুলোতেই রোগী। সবারই শ্বাসকষ্ট। সবাই একটু অক্সিজেন চান। সবাই একটু শান্তিতে নি:শ্বাস নিতে চান। শান্তিতে বাঁচতে চান। কিংবা মরলেও শান্তিতে মরতে। কার মুখ থেকে ভেন্টিলেশন খুলে কার মুখে দেবেন! সবারই যে বাঁচার আকুতি!! সবারই যে আকুলি বিকুলি!!!
বড় ভাইর কষ্ট বাড়ছে। এক একটি শ্বাস যেন হাজার মন ওজনের এক একটি পাথর। রিং বসানো হার্ট এত ভার সইবে কি করে!!! এক পর্যায়ে ছোট ভাইর ভেন্টিলেশন খুলে দেয়া হলো বড় ভাইকে। তিনি কিছুটা শান্তি পেলেন। কিন্তু ভয়াল যে ধকল গেছে তা আর কাটিয়ে উঠতে পারলেন না। মারা গেলেন।
এটি কোন সাধারণ মানুষের ঘটনা নয়। দেশের শীর্ষ শিল্পগ্রুপ এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের বড় এবং ছোট দুই ভাইয়ের বেলায় ঘটে যাওয়া ঘটনা। বড় ভাই মারা গেলেন। ছোট ভাইকে আবার আইসিইউ দেয়া হয়েছে।
সময়মতো আইসিইউ-ভেন্টিলেশন সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে এভাবে ঘটনাটি লিখতে হতো না। কিন্তু চট্টগ্রামে আইসিইউ ভেন্টিলেশন সুবিধা পর্যাপ্ত নেই। এস আলম গ্রুপের পরিচালকের বেলায় গতকাল যা ঘটলো
ঠিক একই ঘটনা কাল অন্য কোন শিল্পপতির বেলায় ঘটতে পারে। ঘটতে পারে আমার বা আমাদের বেলায়ও। ভয়াল সেই দিনটি কেবলই যেন কাছে আসছে। ধেয়ে আসছে।
এস আলম গ্রুপ চাইলে চোখের পলকে কয়েক হাজার আইসিইউ-ভেন্টিলেশন বেড কিনতে পারতো। পারে। অথচ একটি মাত্র বেডের অভাবে ভয়াবহ কষ্ট নিয়ে তাদের পরিবারের এক অভিভাবক মারা গেলেন। হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যাংক, পাওয়ার প্ল্যান্ট, গাড়ি, বাড়ি সহায় সম্পদ সবই যেন অর্থহীন হয়ে গেল।আহা, এই কষ্ট কি প্রাণে মানে!!!!
চট্টগ্রামের মাননীয় শিল্পপতিবৃন্দ, বাড়িতে ঢুকে গেছে বিপদ। কড়া নাড়ছে দুয়ারে। যখন তখন ছোবল মারবে করোনা। এবার কিছু করুন। আরো বহু আগেই করার দরকার ছিল। অনেক কিছু করারও ছিল। করেন নি। করার সময় হয়তো পান নি। কিন্তু আর সময় নেই। এবার কিছু করুন। নিজের জন্য, নিজের পরিবারের জন্য, নিজের শহরের জন্য সর্বোপরি মানুষের জন্য এগিয়ে আসুন। প্লিজ।
লেখাঃ হাসান আকবর, চিফ রিপোর্টার দৈনিক আজাদী