বাংলা সংবাদ২৪ ডেক্স– বরিশালের হিজলা উপজেলায় আজম বেপারী নামের এক যুবককে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের পর প্রকাশ্যে মল-মূত্র খাওয়ানোর ও ভিডিও ধারণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারপর ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের তালতলা জামে মসজিদ সংলগ্ন রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার আজম বেপারী (২৫) হরিনাথপুর এলাকার মহিউদ্দিন বেপারীর ছেলে।
স্থানীয়রা ভিডিওটি দেখে নিশ্চিত করেছেন যে, হরিনাথপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য মাহবুব সিকদারের নেতৃত্বে টুমচর এলাকার রশিদ মাতব্বর, মো. সোলায়মানসহ ৮ জন ব্যক্তি নির্যাতন ও মল-মূত্র খাওয়ানোর কাজে অংশ নেন। আর মল-মূত্র খাওয়ানোর ওই দৃশ্য ভিডিও ধারন করেছেন, মাহবুব সিকদারের চাচাতো ভাই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শাহারিয়ার বাদল।
এ ঘটনার মুলে রয়েছেন নির্যাতনের শিকার আজম বেপারীর ব্যবসায়িক অংশীদার মো. জহির। স্থানীয়সুত্রে জানা গেছে, জহির ও আজম বেপারী দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে ব্যবসা করে আসছিলেন। প্রথমদিকে তারা জ্বালানি তেল কিনে বিক্রি করতেন হরিনাথপুর লঞ্চঘাটে। এরপর তারা জমির ব্যবসা শুরু করেন। তারপর জমি ব্যবসায় তাদের প্রায় ১০ লাখ টাকা লাভ হয়। কিন্তু আজম ব্যবসায়িক সমান অংশীদার হলেও জহির ওই টাকা একাই আত্মসাৎ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয় এবং আজম ব্যবসার লাভের অংশ চাইলে জহির তাকে টাকা দেবে না বলে হুমকি দেন।
এর কিছুদিন আগে আজমকে মারধর করে এলাকা ছাড়াও করেন জহির। তারপর আজম এলাকায় ফিরে এসে পুনরায় ব্যবসার লাভের টাকা দাবি করেন জহিরের কাছে। জহির এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজম জহিরকে মারধর ও অপমান করতে হরিনাথপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য মাহবুব সিকদার ও ইয়নিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শাহারিয়ার বাদলকে টাকা দিয়ে ভাড়া করেন
তাদের পূর্বপরিকল্পনা মতো এক সপ্তাহ আগে আজমকে বাড়ি থেকে ডেকে তালতলা জামে মসজিদের রাস্তায় নিয়ে যান মাহবুব সিকদার। সেখানে আগে থেকেই মাহবুব সিকদারের সহযোগীরা উপস্থিত ছিলেন। তারপর তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আজমের হাত-পা বেঁধে মারধোর শুরু করেন তারা। এরপর আজমের হাত-পা চেপে ধরে বদনাভর্তি মল-মূত্র খাওয়ায় মাহবুব সিকদারের সহযোগীরা।
আর মল-মূত্র খাওয়ানোর ওই দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করেন মাহবুব সিকদারের চাচাতো ভাই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শাহারিয়ার বাদল। পরে আজমকে সেখানে ফেলে রেখে তারা চলে যান।
গতকাল সোমবার মল-মূত্র ঢালার ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেন তারা। সেই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। ঘটনার পর লজ্জায় আজম বেপারী এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করতে অন্য কথাও চলে যান।
হিজলা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ইলিয়াস তালুকদার জানান, বিষয়টি আমরা সোমবার রাতে জেনেছি। যত বিরোধই থাকুক এভাবে কেউ কাউকে অপমানিত করতে পারে না। ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন-সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।
ঘটনার পর লজ্জায় আজম বেপারী এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছে।