জেলা সংবাদদাতা–
নোয়াখালীর চাটখিল চিকিৎসক সেজে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে হাসপাতালে ভর্তি এক নারীকে (২৪) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মঞ্জুরুল হায়দার জনি (৩৫) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। গত বুধবার এ ঘটনা ঘটে।”
;ভুক্তভোগী নারী বলেন-প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে আমি চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১ নম্বর কেবিনে ভর্তি হই। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা এবং চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করি। এরপর বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মঞ্জুরুল হায়দার জনি নামের ওই বখাটে চিকিৎসক সেজে আমার কেবিনে আসেন।”
;ভুক্তভোগী বলেন-তিনি (জনি) আমার শরীর ঘামছে দেখে কেবিনে থাকা আমার ভাই ও বোনকে জামা (গেঞ্জি) কেনার জন্য বাইরে পাঠিয়ে দেন। পরে তিনি আমার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে হেনস্তা করেন। একপর্যায়ে ধর্ষণচেষ্টা করেন। এতে আমি চিৎকার দিতে চাইলে তিনি গলাটিপে আমাকে হত্যা করতে উদ্যত হন।”
;এ সময় ওই ব্যক্তি মাদকাসক্ত ছিলেন বলে ধারণা ভুক্তভোগী ওই নারীর।ওই নারীর সঙ্গে থাকা তার বোন বলেন-পরদিন ওই হাসপাতাল থেকে আমার বোনকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে আসি। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানোর পর বিভিন্নভাবে হয়রানির চেষ্টা চলছে। ”
;আমরা বিষয়টি স্থানীয় সদস্য সদস্য এইচএম ইব্রাহীমকেও জানিয়েছি। তিনি আমাদের আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।অভিযুক্ত মঞ্জুরুল হায়দার জনি ওই হাসপাতালের উপ-সহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা (সেকমো) মনিরুল হায়দার মনিরের ভাই। হাসপাতালে সামনে হায়দার ফার্মেসি নামে তাদের একটি ওষুধে দোকান রয়েছে।”
;জনি স্থানীয় হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী সরবরাহ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।এ বিষয়ে সেকমো মনিরুল হায়দার বলেন-বুধবার দুপুরে ডিউটি শেষ করে বাসায় চলে যাই। পরে বিষয়টি শুনেছি।”
;এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।তবে তিনি দাবি করেন- ২০১৫ সালে তার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে মঞ্জুরুল হায়দার জনি তাদের থেকে আলাদা বসবাস করেন। হায়দার ফার্মেসির মালিকও তার আরেক বড় ভাই মফিজুল হায়দার।”
;হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শহীদুল আহমেদ নয়ন বলেন-রোগীকে হেনস্তার বিষয়ে তদন্ত চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে।এ ঘটনায় অভিযুক্তেরে সঙ্গে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মচারীদের যোগসাজশের অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী নারী। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।”
;আজ শুক্রবার সকালে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খন্দকার মোশতাক আহমেদ।তিনি বলেন-অভিযোগের তদন্তে হাসপাতালের শিশু কনসালটেন্ট ডা. তানজিনা হককে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।.
চাটখিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবির বলেন-খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়েছি। কিন্তু রোগীর লোকজন লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় সেদিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য এইচএম ইব্রাহীম বলেন-বিষয়টি ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়েছে। অভিযোগ শোনার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। ভুক্তভোগী অভিযোগ দিতে না চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাউকে বাদী করে মামলা রুজু করতে বলা হয়েছে।;