৮০ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার সাবেক কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) পার্থ গোপাল বণিককে গোপনে পেছনের দরজা দিয়ে ঢাকার বিশেষ আদালতের দেওয়া জামিন বাতিলে হাইকোর্টের রায় প্রকাশিত হয়েছে।”
;রায়ে বলা হয়েছে, এটি সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান যে, জামিন দরখাস্তটি শোনার পর বিচারক তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ্য আদালতে কোনো আদেশ প্রদান করেননি, যা সংশ্লিষ্ট আইনজীবীগণ কর্তৃক স্বীকৃত এবং আদেশটি অতিগোপনে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়, যা সংশ্লিষ্ট পক্ষের আইনজীবীরাও জ্ঞাত ছিলেন না।”
;এ ধরনের ঘটনা হতাশা ও লজ্জাজনক এবং আইনের সঙ্গে সঙ্গতিহীন। এ জামিনের আদেশ প্রদানের প্রক্রিয়া নানা প্রশ্নের সুযোগ করে দিয়ে বিচার বিভাগকেও বিতর্কিত করেছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। ”
;রায়ে বলা হয়েছে, আমাদের বলতে দ্বিধা নেই যে, জেলা জজ পর্যায়ের একজন বিচারকের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ ও কর্ম প্রত্যাশিত নয়। তার এ ধরনের আদেশ উচ্চ আদালতের প্রতি অবজ্ঞা এবং যা আদালত অবমাননার শামিল। হাইকোর্ট বিভাগ ইতিপূর্বে আসামির জামিন নাকচ করে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিজ্ঞ বিচারক আসামিকে জামিন প্রদান করেহাইকোর্টের আদেশকে অবজ্ঞা করেছেন।”
;গত ২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ পার্থ গোপালের জামিন বাতিল করে রায় দেন। রায়ে তাকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি জামিন প্রদানকারী ঢাকার বিশেষ জজ মো. ইকবাল হোসেনকে সতর্ক করে দেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া মামলাটি ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালত থেকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৪-এ স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়।”
;একই সঙ্গে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৪-কে ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পার্থ গোপালের মামলাটির বিচার সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। ১২ পৃষ্ঠার এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে।”
;হাইকোর্ট থেকে জামিন আবেদন খারিজ করে মামলার বিচার শেষ করার আদেশের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে রায়ে বলা হয়েছে, বিশেষ জজ ওই আদেশের ও রায়ের মর্ম জেনে এবং বুঝে স্ত্রীর অসুস্থতা ও কথিত সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আসামিকে জামিন প্রদান করেছেন। ‘সার্বিক বিষয়’ বলতে বিজ্ঞ বিশেষ জজ কী বুঝিয়েছেন তা বোধগম্য নয়।”
;হাইকোর্ট বিভাগের উপরিউক্ত আদেশ ও রায়ের পর মামলার গুণাগুণ বিচার কিংবা কথিত ‘সার্বিক অবস্থা’ বিবেচনা করে জামিন দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।রায়ে বিচারককে সতর্ক করার বিষয়টি তার ডিসিআরে সংরক্ষণ করতে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
;এ ছাড়া স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিম্ন আদালতগুলোর বিচারকের জামিনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্র্বতী আদেশ ও রায় প্রকাশ্য আদালতে সংশ্লিষ্ট পক্ষগণ বা তাদের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে ঘোষণা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
;উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুদকের সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পার্থ গোপাল বণিককে। ঘুষ ও দুর্নীতির কয়েক লাখ নগদ টাকা তার বাসায় রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে এদিন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয় এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুদক তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।’