সোমবার৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি২৫শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারায়ণগঞ্জে যুবলীগ নেতার ১২০০ বস্তা চাল উদ্ধার!

বাংলা সংবাদ২৪ সংবাদদাতা-– নারায়ণগঞ্জের বন্দরে জামায়াতের সাবেক এমপির মালিকানাধীন গোডাউন থেকে ১২শ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ বিপুল পরিমাণ চাল স্থানীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ভূইয়ার বলে নিশ্চিত হয়েছে প্রশাসন।

জাবেদ ভূঁইয়া মোবাইল ফোনে   স্বীকার করেছেন নওগাঁ জেলার এক ব্যবসায়ী বন্ধু ত্রাণ হিসেবে বিতরণের জন্য তাকে এই চাল পাঠিয়েছেন। তবে এই চলের কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় গোডাউনটি উপজেলা প্রশাসন সিলগালা করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার।

বন্দরের ধামগড় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর ইসতিয়াক রাসেল  জানান, বুধবার রাত ৯টার দিকে গোপন সংবাদ পেয়ে কেওঢালা হায়দারী গার্মেন্টসের গুদামে গিয়ে বিপুল পরিমাণ চালের বস্তা দেখতে পায় পুলিশ।

প্রাথমিকভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- এগুলো মদনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ভূইয়া রেখেছে। জাবেদ ভূইয়াকে ফোন করে এসব চালের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো চট্টগ্রামের রাসেল নামের তার এক বন্ধু তাকে দান করার জন্য দিয়েছেন। আবার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এম এ সালাম ফোনে জানতে চাইলে জাবেদ বলেছেন- নওগাঁর এক বন্ধু তাকে এই চাল পাঠিয়েছে। তবে জাবেদকে ঘটনাস্থলে আসার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও তিনি আসেননি।

স্থানীয়রা জানায়, যুবলীগ নেতা জাবেদ ভূইয়া মদনপুরের এক সময়ের ত্রাস কামু-সুরত আলী বাহিনীর শীর্ষ সন্ত্রাসী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ৪টি হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। যুবলীগের প্রভাবে এসব মামলা ধামাচাপা দিয়ে জামায়াতের সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আবু তাহেরের মালিকানাধীন হায়দরী গার্মেন্টসে বসে স্থানীয় কয়েকটি শিল্প কারখানায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছেন। যুবলীগ নেতা জাবেদের গুদামঘর হিসেবে পরিচিত কেওঢালার হায়দরী গার্মেন্টস।

এ ব্যাপারে জাবেদ ভূইয়া মোবাইল ফোনে  বলেন, চালগুলো এলাকার গরীবদের দেয়ার জন্য আনা হয়েছে। আগামীকাল থেকে এগুলো দান করবো। বিপুল পরিমাণ চালের বিষয়টি কাউকে জানানো হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে জাবেদ ভুইয়া জানান, উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানুকে ছাড়া আর কাউকে জানাইনি।

স্থানীয় মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গাজী এম এ সালাম বলেন, জাবেদ ভূইয়ার এই বিপুল পরিমাণ চালের কথা আমাকে কোনদিন বলেনি। আমার ইউনিয়নবাসীকে এতো বিপুল পরিমাণ চাল বিতরণ করবে আর আমি জানি না বিষয়টা উপজেলা প্রশাসন তদন্ত করে দেখবে আশা করি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোরশেদ আলম  বলেন, সংবাদ পেয়ে আমরা এখানে এসে বিপুল পরিমাণ চালের বস্তা দেখতে পাই।

বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার বলেন, বর্তমানে গুদামটি সিলগালা করে দিয়েছি। যদি সে কাগজপত্র দেখাতে পারে তাহলে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে সাথে নিয়ে গরীবদের মাঝে বিতরণ করে, তাহলে সেটা বিতরণ করা হবে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।