বুধবার৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ৯ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি২৪শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যে শহরে সূর্য উঠবে না দুই-এক মাস!

ভোর হলে দেখা দেয় সূর্যের হাসি। গোটা প্রকৃতি আলোকিত করে, তপ্ত করে সূর্যের তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে সব জায়গায়। যদি এমন হয়, এই সূর্য উঠবে না দুই-এক মাস!
কি, অবাক হচ্ছেন? ভয় লাগছে বিষয়টি শুনে? বিচিত্র এই দুনিয়ায় কতই না ঘটনা ঘটে। এমনটাই নিয়মিত ঘটছে আলাস্কায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে উত্তরে আলাস্কা রাজ্যের একটি অন্যতম শহর উতকিয়াগভিক। শহরটি সুমেরুবৃত্ত থেকে ৩২০ মাইল দূরে অবস্থিত। একসময় ‘ব্যারো’ নামে পরিচিত ছিল এই শীতলতম স্থানটি।
মাত্র ৪ হাজার লোকের বসবাস এখানে। বর্তমানে চলছে ৬৫ দিনের রাত। অর্থাৎ নভেম্বরের শেষ দিক, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারির শুরুর দিক মিলে দুই মাস আর সূর্যের আলো দেখা যাবে না।
প্রথম দিকে একদিন মাত্র ৬৪ মিনিটের জন্য সূর্যের আলো দেখে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা। গত বছর ১৮ নভেম্বর স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪৪ মিনিট নাগাদ সূর্য ডুবে যায়। ২০১৮ সালকে দেড় মাস আগেই বিদায় জানিয়ে ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি দুপুর ১টা ৪ মিনিটে সূর্য উঠবে বলে আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যায়।
এই শহরে শেষ সূর্য ওঠে নভেম্বরের একদিন দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে আর অস্ত যায় দুপুর ১টা ৪৪ মিনিটে। শেষবারের মতো সূর্যকে দেখতে জড় হন বাসিন্দারা। মেরু রাতের শুরুতে উৎসবের ঢঙেই শুরু হয় অনন্ত রাত।
বন্ধুবান্ধব মিলে একত্রে ভালো ভালো খাবার খেয়ে, ভৌতিক ছবি দেখে আর আনন্দ-হাসিতামাশা করে দিন কাটান তারা। এর আগে গত ৩০ দিনও রাত ছিল অঞ্চলটিতে।
তবে ওইদিনই পুরোপুরি দীর্ঘদিনের জন্য অস্ত যায় সূর্য। যদিও মেঘের জন্য ৬৪ মিনিটের সূর্যকে ভালোভাবে দেখতে পাননি তারা। তবে অঞ্চলটি একেবারে অন্ধকারে ঢাকা পড়ে না। দেখা যায় পোলার নাইট বা মেরু রাত। প্রতি বছরই এমন হয়ে থাকে। মেরু রাতগুলো তারা অতিক্রম করেন মূলত ভীতিমূলক ছবি দেখে।
জানা যায়, এই হিম রাত চলাকালীন তাপমাত্রা থাকে মোটামুটিভাবে মাইনাস ৫ থেকে মাইনাস ১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। শীতের মাত্রা বৃদ্ধির দিকে যা মাইনাস ২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত পৌঁছে।
শুধু উতকিয়াগভিক শহরই নয়, আলাস্কার কাকটোভিক, পয়েন্ট হোপ ও আনাকটুভুক পাসের বাসিন্দারাও এক থেকে দুই মাস সূর্যের দেখা পান না। নভেম্বর মাসের শেষ থেকে ডিসেম্বরের শুরুর সময়টুকুর মধ্যে এসব অঞ্চলেও সূর্য ডুবে থাকে।