শুক্রবার২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ২৪শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি১০ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কাজ করে ঘুষ নিলেন অফিস সহকারী

সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম আবদুর রফেলের কাছ থেকে জমি রেজিস্ট্রি করতে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কুষ্টিয়ার সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারী রফিকুল ইসলাম মুকুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার ঘুষ নেওয়ার ঘটনাটি ঘটে।”

;জানা গেছে- কুষ্টিয়া এনআরবিসি ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য জমি রেজিস্ট্রি করতে গেলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম আবদুর রফেলের কাছ থেকে প্রথমে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ চান কুষ্টিয়ার সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারী রফিকুল ইসলাম মুকুল। পরে বাধ্য হয়ে রফেলের বড় ভাই অ্যাডভোকেট গোলাম রসুল তাকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ প্রদান করেন।”

;ঘটনার বিষয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন অ্যাডভোকেট রফেল। পোস্টটি ভাইরাল হলে ঘুষের বিষয়টি সামনে আসে। এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম আবদুর রফেল  জানান- গত মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে একটি দলিল সম্পাদন করার জন্য তিনি কুষ্টিয়া সদর সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহের কার্যালয়ে যান।”

;জমি বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য মূলত রেজিস্ট্রি করতে যান। সেখানে তার সাথে ব্যাংক কর্মকর্তাসহ তার বড় ভাই উপস্থিত ছিলেন। দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার পর অফিসের ক্লার্ক রফিকুল ইসলাম মুকুল ও পিয়ন আক্কাস আলী তার কাছে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এ সময় তিনি দাবিকৃত টাকার বিপরীতে রশিদ দাবি করেন।”

তিনি আরও জানান- রেজিস্ট্রার অফিসের ওই দুই কর্মচারী রশিদ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে নিজের পরিচয়পত্র দেখান তিনি। এ সময় ওই দুই কর্মচারী ঘুষের পরিমান ৫ হাজার টাকা কমিয়ে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। তারা বলেন-এটা এখানকার নিয়ম। বি এম রফেল এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে রেজিস্ট্রি অফিস ত্যাগ করলে তার বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা আদায় করেন মুকুল।”

‘বি এম আবদুর রফেল বলেন- আমার যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের কি পরিমান ভোগান্তির শিকার হয় তা সহজেই বোঝা যায়। একটা সরকারি অফিস। আমিও একজন কর্মকর্তা। পরিচয় দেওয়ার পরও তারা ঘুষ দাবি করে। এটা দেখার কেউ নেই। আমি খুবই মর্মাহত বিষয়টি নিয়ে। এটার একটা সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। আমি পরিচয় দিলেও ন্যূনতম সম্মানও দেখানো হয়নি সাব-রেজিস্ট্রিঅফিস থেকে।”

;ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানান- বিষয়টি নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার তার অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা ও দলিল লেখককে তলব করে ঘটনাটি মিটমাট করে দেওয়ার অনুরোধ জানান। এরপর অফিস সহকারী মুকুল বিএম আবদুর রফেলকে ফোন দিয়ে টাকা ফেরত নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান। তিনি ঘুষের টাকা ফেরত না নিয়ে ঢাকা চলে আসেন।”

;কুষ্টিয়ার সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারী রফিকুল ইসলাম মুকুল বলেন, আমাদের উপায় নেই নেতাদেরও টাকা-পয়সা দিতে হয়। কুষ্টিয়ার সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহ বলেন- ‘বি এম আবদুর রফেল আমার দপ্তরে এসেছিলেন জমি রেজিস্ট্রি করতে। উনার কাজ দ্রুত করে দিয়েই আমি দুপুরের খাওয়ার জন্য বাসায় চলে যাই। “

;পরে অফিসে এসে জানতে পারি অফিস সহকারী মুকুল তার কাছে টাকা চেয়েছিল। এ বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিক জেলা রেজিস্টার প্রভাকর সাহাকে জানাই। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে আজ দুপুরে অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম মুকুলকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।”

;কুষ্টিয়া জেলার রেজিস্ট্রার প্রভাকর সাহা বলেন- ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি আমি জানতে পেরে মহাপরিদর্শকের (নিবন্ধন) সাথে আলাপ করলে তিনি আমাকে ঘটনার সাথে জড়িত কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন। ওই কর্মচারীকে আজ ২৪৯ নং স্মারকের চিঠিতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও করা হবে।:’