বুধবার১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি২৭শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পটুয়াখালীতে চুরির অপবাদে  ৬ ঘণ্টা শিকলবন্দি শিশু!

বাংলা সংবাদ২৪ সংবাদদাতা–পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায়  চায়ের দোকানে চুরি করার অপবাদে  ১০ বছরের এক শিশুকে মারধর করে ৬ ঘণ্টা শিকলবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। ওই শিশুটির নাম রিপন মৃধা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের স্লুইসবাজারের একটি চায়ের দোকান থেকে তাকে শিকলমুক্ত করা হয়। রিপন মৃধা চরমোন্তাজ স্লুইসবাজার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মৃত রুবেল মৃধার ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে চরমোন্তাজ স্লুইসবাজারের বেল্লাল প্যাদার মালিকানাধীন চায়ের দোকানে চুরি করেছে সন্দেহে শিশু রিপনকে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দোকান মালিক। একপর্যায় ওই দোকানের পেছনেই শিশুটির পায়ে শিকল পরিয়ে আটকে রাখেন বেল্লাল। এ খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা উপস্থিত হন। বিষয়টি টের পেয়ে ওই শিশুটিকে তাৎক্ষণিক শিকলমুক্ত করে দেন বেল্লাল।

শিশু রিপনের ভাষ্য, ৪০০ টাকা চুরি করায় চা দোকানদার বেল্লাল তাকে ধরে চড়-থাপ্পড় ও কিলঘুষি দিয়ে পায়ে শিকল পরিয়ে আটকে রাখেন।
রিপনের মা জাহানারা বলেন, ছেলেকে মারধর করে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার খবর শুনে তিনি ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে ইউপি সদস্যের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার প্রস্তাব দিয়ে ছেলেকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেন।

কিন্তু বেল্লাল এতে রাজি হননি। পরে আবার ছেলেকে লোকজন দিয়ে মারধর করানো হচ্ছে, এমন খবর পেয়ে ফের গেলে তাকে গালিগালাজ করেন বেল্লাল। চরমোন্তাজ ৭ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হালেম খান বলেন, শিকলের বিষয়টি আমি জানি না। তবে শুনেছি যে, শিকল দিয়ে নাকি বেঁধে রাখা হয় রিপনকে। আমি বেল্লালকে জিজ্ঞেস করলে তিনি অস্বীকার করেন। পরে ওই ছেলেকে তার মায়ের হাতে তুলে দিয়েছি।

অভিযুক্ত চায়ের দোকানদার বেল্লাল প্যাদা বলেন, চাকু দিয়ে দোকানের পেছনের টিন কাইট্টা রিপন হাজার-বারোশ টাকা নিছে। আর কিছু বিস্কুট খাইছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ক্যান (যদি) জাইগ্যায়, তাই শেকল দিয়া প্যাঁচ দিয়া রাখছি। অরে থাপ্পরও দিই নাই, কিছুই করি নাই। অরে চা, জেলাপি খাওয়াইছি। অর মাও আইয়া আমার ধারে বলে নাই যে, ওরে দিয়া দে। পরে ছাইড়া দিছি, আমি মাফটাফ চাইছি।

 চরমোন্তাজ পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ আনিসুর রহমান বলেন, বিষয়টি শুনে দায়িত্বরত এএসআই রিয়াজকে দেখতে বলেছি। তবে শিকল দিয়ে যদি বেঁধে রাখে, এটি আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার মতো অপরাধ। এ ধরনের অপরাধ করলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।